অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতের রাষ্ট্রপতি বললেন, মহিলা আইনজীবীদের শিশুদের জন্য সব আদালতে ক্রেশ জরুরি


ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু
ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু

ভারতের বর্তমান রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ঝাড়খণ্ড রাজ্যের রাজ্যপাল ছিলেন ছয় বছর। কিন্তু ঝাড়খণ্ডের সৌন্দর্য, সংস্কৃতি, জনগণ তাঁর অতি প্রিয়। ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টের নতুন ভবনের উদ্বোধন হল তাঁর হাতেই। পাশে ছিলেন দেশের প্রধান বিচারপতি ধনঞ্জয় চন্দ্রচূড়, আইনমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। সেই অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু বললেন, "আইনের ভাষাকে আরও বেশি করে সবার কাছে পৌঁছে দিতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি আদালতের রায় ও অন্যান্য নথিকে বিভিন্ন ভারতীয় ভাষায় প্রকাশ করার উদ্যোগ নিয়েছেন। ঝাড়খণ্ডের মত বৈচিত্র্যময়, বহু ভাষার রাজ্যের জন্য এটা তো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।"

রাষ্ট্রপতি নিজে এক সময়ে শিক্ষিকা ছিলেন। কাজ করেছেন অনগ্রসর সমাজের নানা স্তরের সঙ্গে, তাদের উন্নতিকল্পে। রাষ্ট্রপতির বক্তৃতায় যেন ছুঁয়ে গেল সেইসবই। সওয়াল করলেন, "আজকাল বিভিন্ন আদালত ভবনে দেখি ক্রেশ ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। যাতে আমার বোনেরা কাজ করার পাশাপাশি নিজেদের একরত্তিদেরও যত্ন করতে পারেন। প্রতিটি কর্মস্থলেই এমন সুবিধে থাকা দরকার। আশা করি এই নতুন ভবনেও এটি রয়েছে।"

প্রায়ই অভিযোগ ওঠে, দেশে আইনের সাহায্য পাওয়ার খরচ অনেক। নামী আইনজীবীরা আকাশছোঁয়া চার্জ করেন একদিনের শুনানিতে। দুঁদে আইনজীবী পেতে গেলে খরচটাও তেমন লেগে যায়। ফলে বিচারপ্রার্থীদের একাংশের নাগালের বাইরেই থাকেন তাঁরা। রাষ্ট্রপতি মুর্মু তুলে ধরেন এই ইস্যুটিকেও। পাশাপাশি বলেন, "বিচারাধীন বন্দির সংখ্যা বাড়ছে। এই নিয়ে চিন্তা করা দরকার, আলোচনা হওয়া দরকার।"

উল্লেখ্য, ভারতে বন্দির সবচেয়ে বড় অংশই বিচারাধীন এবং অনেকের ক্ষেত্রেই এই বিচারাধীন অবস্থায় বন্দিদশা দশ বছরেরও বেশি পেরিয়ে গিয়েছে। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ও বলেন, "হাইকোর্টের বিচারপতি থাকার সময় দেখেছিলাম, বিচার আর অবিচারের ফারাকটা কোথায়। স্রেফ ট্যাঁকের জোর না থাকার কারণে কত বিচারাধীন বন্দি জেলেই পড়ে থাকে। সুবিচার তারা পায় না। আমাদের মনে রাখতে হবে, দোষী প্রমাণিত না হওয়া অবধি যে কোনও বিচারাধীন বন্দিকে নির্দোষ ধরে নেওয়াই কিন্তু ফৌজদারি আইনের গোড়ার কথা।"

রাষ্ট্রপতি, আইনমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি সকলেই একটা ব্যাপারে একমত হন যে, রায়দানই একমাত্র বিচার নয়, হতে পারে না। দেশের আইনব্যবস্থাকে এমনভাবে ঢেলে সাজতে হবে, যাতে প্রকৃত অর্থে সুবিচার পান আমজনতা। তাঁদের সুবিচারের পথে কোনও কিছুই যেন বাধা হয়ে না দাঁড়াতে পারে।

XS
SM
MD
LG