ভারতের কর্ণাটকে নব নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব বৃহস্পতিবার ১৮ মে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠিয়েছেন। শনিবার ২০ মে কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুতে শপথ অনুষ্ঠানে হাজির থাকতে আমন্ত্রণ জানিয়ে শুক্রবার ১৯ মে মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করেন কর্ণাটকে মুখ্যমন্ত্রী পদে অপেক্ষমান বর্ষীয়ান নেতা সি সিদ্দারামাইয়া।
তৃণমূল সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী তথা শাসক দল তৃণমূলের নেত্রী তাঁকে জানিয়ে দেন, তাঁর পক্ষে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে তৃণমূলের পক্ষে অবশ্যই কেউ যাবেন।
পরে তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও ব্রায়েন জানান, শনিবার বেঙ্গালুরুতে দলের তরফে উপস্থিত থাকবেন লোকসভায় তৃণমূলের উপ দলনেতা কাকলি ঘোষ দস্তিদার।
মমতা বন্দোপাধ্যায়ের না যাওয়ার সিদ্ধান্তে শপথ অনুষ্ঠান ঘিরে বিজেপি বিরোধী মঞ্চ গড়ার কংগ্রেসের উদ্যোগ যে নি:সন্দেহে খানিকটা ধাক্কা খেল বলেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মত। আগামীকাল কংগ্রেস সমমনোভাবাপন্ন সব দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। সেই তালিকায় আলাদা আলাদা কারণে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি প্রথম সারির তিন নেতা তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও, আম আদমি পার্টির সুপ্রিমো তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং বিএসপি নেত্রী মায়াবতীকে।
কেসিআর কংগ্রেস ও বিজেপি বিরোধী জোট গড়ার পক্ষপাতী। তাছাড়া মাস কয়েক পরই তেলেঙ্গানায় বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের প্রধান প্রতিপক্ষ কেসিআরের দল বিআরএস। অন্যদিকে, আপ নেতা কেজরিওয়াল ঘোষণা করেছেন, তিনি কোনও জোটে নেই। ‘একলা চলো’ রাস্তায় হাঁটবেন ২০২৪ পর্যন্ত। এমনকী ২০২৪-এর লড়াই মোদী-বনাম কেজরিওয়াল বলেও দাবি করতে শুরু করেছে তাঁর দল। অন্যদিকে, মায়াবতীর সঙ্গে বিজেপির বোঝাপড়া এখন আর গোপন নেই। সিবিআই-ইডির হানাদারি থেকে বাঁচতে তিনি উত্তরপ্রদেশে গত বছর বিধানসভা নির্বাচনের পর সদ্য অনুষ্ঠিত পুরভোটেও বিজেপিকে দান ছেড়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টির।
তবে এরপরও এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার, শিবসেনার উদ্ধব গোষ্ঠীর উদ্ধব ঠাকরে অথবা সঞ্জয় রাউত, ডিএমকে প্রধান এম করুণানিধি, বিহারের দুই নেতা নীতীশ কুমার ও তেজস্বী যাদব, সিপিএম ও সিপিআইয়ের যথাক্রমে সীতারাম ইয়েচুরি, ডি রাজা, কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন, জম্মু-কাশ্মীরের দুই নেতা মেহবুবা মুফতি, ফারুক আবদুল্লা, প্রমুখ উপস্থিত থাকবেন।
কিন্তু কংগ্রেস সূত্রের খবর, তাঁরা চাইছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বেঙ্গালুরুর মঞ্চে হাজির করতে। সেই কারণে কর্নাটকের ফল প্রকাশের পর মমতা কংগ্রেসকে শুভেচ্ছা না জানালেও কংগ্রেস শিবির চাইছিল বৃহত্তর বিজেপি বিরোধী ঐক্যের বার্তা দিতেই তৃণমূল নেত্রীকে বেঙ্গালুরুর মঞ্চের ছবির ফ্রেমে রাখতে। বিশেষজ্ঞদের মত, যে ফ্রেমকে সামনে রেখে কংগ্রেস আগামী দিনে আরও অনেক দলকে পাশে পাওয়ার চেষ্টা করবে। এখন মমতা এড়িয়ে যাওয়ায় সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদবেরও বেঙ্গালুরু যাত্রা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।