আধুনিক ভারতের ইতিহাসে ভারতের গুজরাত রাজ্যের চার গুজরাতি বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন। ভারতে কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মতে, গুজরাতের এই মহান চার সন্তান হলেন, মহাত্মা গান্ধী, সর্দার বল্লভভাই পটেল, মোরারজি দেশাই এবং ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
‘দিল্লি গুজরাতি সমাজ’ সংগঠন এবার ১২৫ বছরে পা দিল। সেই উপলক্ষ্যে রাজধানীতে আয়োজিত অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সেখানে গুজরাতিতে ভাষণ দেন শাহ।
তাঁর বক্তব্য, দেশের স্বাধীনতার লড়াইয়ে মহাত্মা গান্ধীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তারপর স্বাধীনতা প্রাপ্তির পরে দেশকে অখণ্ড রাখাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিলেন প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বল্লভভাই পটেল।
এই কংগ্রেস নেতা তথা স্বাধীনতা সংগ্রামী তাঁর চারিত্রিক দৃঢ়তার কারণে লৌহ মানব হিসাবে পরিচিত ছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরের বছরই কাশ্মীরের দখল নিতে যুদ্ধ ঘোষণা করে পাকিস্তান। ওদিকে তখনও হায়দরাবাদের নিজাম-সহ বেশ কিছু করদ রাজ্য ভারতের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে আপত্তি তুলেছিল। হায়দরাবাদে রীতিমত সেনা নামিয়ে নিজামের বিদ্রোহ দমন করতে হয়। গোয়াও তখন পর্যন্ত ভারতের অংশ হয়নি। এছাড়া সদ্য জন্ম নেওয়া দুই রাষ্ট্রের সীমান্তবর্তী বহু প্রদেশ, জেলা দেশ বদলের দাবিতে অনড় ছিল। অন্যদিকে, স্বাধীনতা ঘোষণা করে পৃথক রাষ্ট্র চেয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন শুরু করে উত্তর-পূর্ব ভারতের একাধিক জনগোষ্ঠী। সেই পরিস্থিতি দৃঢ়তা ও সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করেছিলেন পটেল। তাই কংগ্রেসের প্রথম সারির নেতা হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে আইকন বানিয়ে নিয়েছে বিজেপি। গুজরাতে নর্মদার তীরে পাটেলের সুদীর্ঘ মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
শাহের কথায় দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিশেষ ভূমিকা ছিল মোরারজি দেশাইয়ের। প্রসঙ্গত, জরুরি অবস্থান পর ১৯৭৭ সালে প্রধানমন্ত্রী হন মোরারজি।
অমিত শাহর তালিকায় চতুর্থ নাম নরেন্দ্র মোদী। শাহের কথায়, গোটা বিশ্বে আজ ভারতকে নিয়ে বিশেষ আগ্রহ তৈরির অবদান মোদীজির।
তিনি ভাষণে প্রধানমন্ত্রীর নয় বছরের কার্যকালের খতিয়ানও তুলে ধরেন। ২৬ মে নয় বছর পূর্ণ করবে মোদী সরকার। কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, "২০১৪ সালে আর্থিক মানদণ্ডে গোটা বিশ্বে ভারতের অবস্থান ছিল একাদশ স্থানে। এখন বিশ্বের পঞ্চম বৃহৎ অর্থনীতি এই দেশ।" তাঁর দাবি, "মোদীজি সকলের পাশে আছেন, সকলে পাশে আছে মোদীজির।" স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তুলে ধরেন কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ বাতিল থেকে শুরু করে পাকিস্তানে সার্জিক্যাল স্টাইকের মতো বিষয়।
তবে তাঁর গান্ধী, পটেল, মোরারজির সঙ্গে একই বন্ধনীতে মোদীজিকে রাখা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে।