গত সপ্তাহেই ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ঘৃণা ভাষণ বন্ধে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলিকে কড়া বার্তা দিয়েছে। তাতে ভিন্ন ধর্মের প্রতি অসহিষ্ণুতা, হিংসা, ঘৃণা, বিদ্বেষ পোষণের ঘটনা নিয়েই মূখ্যত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দেশের শীর্ষ আদালত। এবার বিদেশ থেকেও এল এই বিষয়ে উদ্বেগের খবর। যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থা ইউনাইটেড স্টেটস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম তাদের সদ্য প্রকাশিত রিপোর্টে ভারতকে ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘনের ঘটনায় ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসাবে চিহ্নিত করতে সে দেশের সরকারকে সুপারিশ করেছে।
১৯৯৮ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘনের ঘটনায় নজরদারির কাজ করে আসা এই সংস্থা টানা চারবার ভারত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল তাদের বার্ষিক রিপোর্টে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনকে পেশ করা রিপোর্টে তারা ভারতের বিরুদ্ধে বেশ কিছু কঠোর পদক্ষেপ করার সুপারিশও করেছে। তারা বলেছে, যে সব প্রশাসনিক আধিকারিক এবং এজেন্সির লোকজন ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘনের ঘটনায় অভিযুক্ত তাদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হোক। তারা যাতে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা না পায় সে ব্যবস্থা করুক প্রশাসন। ওই আধিকারিকদের যুক্তরাষ্ট্রে কোনও সম্পদ থেকে থাকলে তাও বাজেয়াপ্ত করে নেওয়া হোক।
প্রসঙ্গত, গত বছর বাংলাদেশের নিরাপত্তা সংস্থা র্যাবের বেশ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় কর্তার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন। তাদের যুক্তরাষ্ট্রের ভিস দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা করে ঢাকার যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস। তালিকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্তার নামও ছিল। ওই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গুম খুনে যুক্ত থাকার অভিযোগ করে যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক মানবাধিকার সংস্থা। অবশ্য গত বছরের শেষের দিকে সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন।
ভারতের ক্ষেত্রে এই সংস্থার রিপোর্টে অবশ্য নির্দিষ্ট করে কোনও নিরাপত্তা এজেন্সি বা সরকারি সংস্থার নাম করা হয়নি। যদিও টানা চারবার ওই সংস্থা ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতার মান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও ট্রাম্প এবং বাইডেন, কোনও প্রশাসনই ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়নি। সুপারিশ মানা বা না মানা নিয়ে এবারও যুক্তরাষ্ট্রের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল স্পষ্ট জবাব দেননি।
প্যাটেলের কথায়, "আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত ইউএস কমিশন হল একটি স্বাধীন মার্কিন কমিশন যা প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারি অফ স্টেট এবং কংগ্রেসকে নীতিগত সুপারিশ প্রদানের জন্য প্রতিষ্ঠিত। এটি যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গ নয়। এই ধরনের রিপোর্ট যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের কাছে ধর্মীয় স্বাধীনতার গুরুত্বকে তুলে ধরে।"