অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

কর্নাটকে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে ‘ক্রাইপিএম’, ‘পেসিএম’ হ্যাশট্যাগে প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা কংগ্রেসের


ভারতে কর্নাটক রাজ্যে আগামী ১০ মে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে সোমবার ১লা মে, ঝড় তুলেছে কংগ্রেসের নয়া হ্যাসট্যাগ ক্যাম্পেন। #ক্রাইপিএমপেসিএম প্রচারে কংগ্রেস নিশানা করেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইকে। মোদী সম্পর্কে ‘ক্রাইপিএম’ শব্দবন্ধ ব্যবহার করে কংগ্রেস বলেছে, এই প্রধানমন্ত্রী শুধু বিলাপ করতে জানেন। ‘আমাকে আক্রমণ করা হয়েছে’ বলে কথায় কথায় কাঁদুনি করা তাঁর অভ্যাস।

অন্যদিকে, কর্নাটকের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের মস্তবড় অস্ত্র হল এবার দুর্নীতি, সরকারি কাজে কাটমানির অভিযোগ। রাজধানী দিল্লিতে, পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় বিজেপি নেতারা যেভাবে যথাক্রমে আপ ও তৃণমূল ও ওই দলের সরকারের বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ করে থাকেন, কর্নাটকে সেই একই সমালোচনা শুনতে হচ্ছে তাদের নিজেদের সরকার সম্পর্কে।

প্রকল্পের ৪০ শতাংশ টাকা কমিশন বাবদ না দিলে সরকারি কাজ পাওয়া যায় না, সুইসাইড নোটে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীর নাম করে অভিযোগ তুলে গত বছর আত্মহত্যা করেন এক ঠিকাদার। সেই মন্ত্রী বিএস ঈশ্বরাপ্পা পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। বিজেপি তাঁকে টিকিট দেয়নি এবার। কিন্তু ‘না খাউঙ্গা না খানে দুঙ্গা’ স্লোগান দিয়ে কথায় কথায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করা মোদী সেই ঈশ্বরাপ্পার স্মরণ নেন ক’দিন আগে। টিকিট না মেলায় ক্ষুব্ধ ঈশ্বরাপ্পাকে টেলিফানে প্রধানমন্ত্রী অনুরোধ করেন দলের হয়ে প্রচারে নামতে।

কংগ্রেস এবার ৪০ শতাংশ কমিশনের কথা ফলাও করে প্রচার করছে। কারণ, আত্মঘাতী ঠিকাদার মৃত্যুর আগে প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং মুখ্যমন্ত্রী বোম্মাইকে চিঠি লিখে নালিশ জানিয়েছিলেন। কিন্তু কেউই কোনও পদক্ষেপ করেননি। উল্টে ঈশ্বরাপ্পা তাঁর মন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি মানতে চাননি। দলের ভিতর কথা ওঠায় তবে পদত্যাগ করতে বলেন ঈশ্বরাপ্পাকে। কংগ্রেস তাই দুর্নীতি নিয়ে মোদী এবং বোম্মাই দু’জনকেই নিশানা করেছে। পেসিএম কটাক্ষ বোম্মাইকে নিক্ষেপ করেছে তারা।

অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী এ পর্যন্ত তাঁর তিনটি নির্বাচনী সভাতেই অনেকটা সময় ধরে অভিযোগ করেন, কংগ্রেস তাঁকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করছে। প্রধানমন্ত্রী এমনকী হিসাব দেন, মোট ৯১ বার হাত চিহ্নের পার্টি তাঁকে গালমন্দ করেছে।

একথা ঠিক, কর্নাটকেই কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে মোদীকে বিষধর সাপের সঙ্গে তুলনা করেন। যদিও পরক্ষণেই ব্যাখ্যা দেন ব্যক্তি নরেন্দ্র মোদী নন তিনি বিষধর সাপ বলতে বিজেপি ও আরএসএসের নীতিকে বুঝিয়েছেন। তার পাল্টা হিসাবে প্রথমসারির বিজেপি নেতারা সনিয়া গান্ধীকে ‘বিষকন্যা’ বলে তির ছুঁড়েছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী লাগাতার অভিযোগ করে চলেছেন কংগ্রেস সব কিছু ছেড়ে তাঁকে আক্রমণ করছে। কারণ তিনি কাজ করছেন।

প্রধানমন্ত্রীর এই কথাকেই রবিবার নিশানা করেন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। রবিবারের সভায় কংগ্রেস নেত্রী বলেন, "এমন প্রধানমন্ত্রী দেখিনি যিনি নিজের কথা বেশি বলেন। ইন্দিরাজি, রাজীবজি, অটলজি, মনমোহনজি, বাকি প্রধানমন্ত্রীদেরও কেউ এমন ছিলেন না।" প্রিয়ঙ্কা আরও বলেন, "নির্বাচন একটা রাজনৈতিক যুদ্ধ। মানুষ ভোটের ময়দানে হিসাব মেলাতে চায়। এই প্রধানমন্ত্রীর আম আদমির কথা শোনার সময় নেই। তিনি শুধু নিজের কথা বলতেই ব্যস্ত।" মোদী তাঁকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হয়েছে বলে বারে বারে অভিযোগ তোলায় কংগ্রেস তাঁর সম্পর্কে ক্রাইপিএম কথাটি ব্যবহার করেছে।

XS
SM
MD
LG