আজ শচীন তেন্ডুলকারের পঞ্চাশতম জন্মদিন। ক্রিকেটের (Cricket) মাঠে অনায়াসেই এমন কত হাফ সেঞ্চুরি করেছেন তিনি তা লেখা আছে রেকর্ডের খাতায়। ভারত তথা বিশ্ব ক্রিকেটের সর্ব সময়ের এই অন্যতম জনপ্রিয় ক্রিকেটারের বিশেষ দিনে তাঁকে নিয়ে মেতে উঠেছে আসমুদ্র হিমাচল।
১৯৭৩ সালের আজকের দিনে ২৫ এপ্রিল ভারতের মহারাষ্ট্রর বান্দ্রায় তেন্ডুলকর পরিবারে জন্ম নেন শচীন। বাবা ছিলেন মারাঠি কবি। প্রিয় সুরকার শচীন দেব বর্মণের নামের সঙ্গে মিলিয়ে ছেলের নাম রেখেছিলেন তিনি। কিন্তু গান নয় ছোট্ট শচীন বুঝতেন শুধু ক্রিকেট। সাহিত্য সহাস হাউজিং কমপ্লেক্সের আঙিনা যেন ছোট থেকে থেকেই তাঁর কাছে ২২ গজের পিচ!
সময় মতো স্কুলে ভর্তি হন শচীন, কিন্তু পড়াশুনার প্রতি আগ্রহ তেমন ছিল না। সুযোগ পেলেই খেলার মাঠে দৌড়ে যেতেন। কখনও ক্রিকেট, কখনও টেনিস, এই নিয়েই মেতে থাকতেন। তবে ক্রিকেটের প্রতি বেশি টান থাকায় তাঁর স্বপ্ন দেখা শুরুও এই খেলাকেই কেন্দ্র করে। শচীনের বয়স যখন মাত্র ১০ তখন ভারত প্রথমবার বিশ্বকাপ জেতে। কপিল দেবের হাতে ওঠে ট্রফি।
সেই ট্রফি নিজের হাতে ধরার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন শচীন। বান্দ্রা থেকে শিবাজি পার্কে ছুটতেন কাঠের ব্যাট হাতে। সেখানেই প্র্যাকটিস করাতেন কোচ রমাকান্ত আচরেকর। শচীনের ক্রিকেট জীবনের প্রথম গুরু। এত ছেলের মধ্যে থেকেও কোহিনূর চিনতে ভুল করেননি রমাকান্ত। নিজের মতো করে গড়ে তোলেন তাঁকে।
বাকিটা ইতিহাস। উল্কার গতিতে ক্রিকেট জীবনে এগিয়ে যান শচীন।
স্কুল ক্রিকেটে তাক লাগানো পারফরম্যান্স করে মুম্বই ক্রিকেট বোর্ডের নজরে আসেন। ১৯৮৭-৮৮ মরসুমে রঞ্জি ক্রিকেটে অভিষেক হয়। ১৫ বছর বয়সি শচীন প্রথম ম্যাচেই হাঁকান শতরান।
সেই যে রেকর্ডের খাতায় নাম লেখানো শুরু করলেন, তারপর শুধুই রেকর্ড। পাতা ভরেছে একের পর। নিজের রেকর্ড নিজেই ভেঙেছেন। ছাপিয়ে গেছেন অন্যান্যদের। ২৪ বছরের ক্রিকেট জীবনে শচীন যা করে দেখিয়েছেন তা ভাবনার অতীত। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০০ টা সেঞ্চুরির মালিক তিনি।
১৯৯২ সালে প্রথম বিশ্বকাপ খেলেন শচীন। ‘৯৬, ‘৯৮, ২০০২… পরপর বিশ্বকাপ খেলেছেন। কিন্তু ১০ বছর বয়েসে যে ট্রফি ছুঁয়ে দেখার স্বপ্ন দেখেছিলেন সেটা অধরাই থেকে গিয়েছিল। ২০১১ সালে ২ এপ্রিল মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে সেই স্বপ্ন পূরণ হল। সেদিন তাঁর চোখে জল দেখেছিল বিশ্ববাসী।
ক্রিকেট মাঠের বাইরেও অজস্র সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন শচীন। পদ্মশ্রী থেকে ভারতরত্ন— দেশের সব সম্মানে ভূষিত হয়েছেন তিনি। সেই শচীনের জীবনের হাফ সেঞ্চুরিতে উত্তাল গোটা দেশ।