অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

মধ্যপ্রদেশ রাজ্যে সরকারি গণবিবাহ অনুষ্ঠানে বেআইনিভাবে পাত্রীদের প্রেগনেন্সি টেস্ট


ভারতের আহমেদাবাদে একটি গণবিবাহ অনুষ্ঠান শুরুর জন্য অপেক্ষা করছে মুসলিম কনেরা৷ (ফাইল ছবি)
ভারতের আহমেদাবাদে একটি গণবিবাহ অনুষ্ঠান শুরুর জন্য অপেক্ষা করছে মুসলিম কনেরা৷ (ফাইল ছবি)

ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের ‘মুখ্যমন্ত্রী কন্যা বিবাহ/নিকা যোজনা’র অধীনে শনিবার ২৩ এপ্রিল দিন্দোরির গাদসারাই এলাকায় বসেছিল বিবাহ বাসর। সমাজের আর্থিকভাবে দুর্বল পরিবারের মেয়েদের জন্য সরকারি উদ্যোগে এই গণবিবাহ অনুষ্ঠানে ২১৫ জন তরুণীর বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। সূত্রের খবর, সেখানে পাত্রীরা অন্তঃসত্ত্বা কিনা তা বোঝার জন্য তাঁদের প্রেগনেন্সি টেস্ট করানো শুরু হয়। তাতে ৫ জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসাতেই তাঁদের বিয়ে বাতিল করা হয়।

ঘটনা সামনে আসার পরেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। কে প্রেগনেন্সি টেস্ট করানোর নির্দেশ দিল, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী দল কংগ্রেস।

যেহেতু নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্র ছাড়া বিয়ের আগে মেয়েদের প্রেগনেন্সি টেস্ট করানোর কোনও নিয়ম নেই, তাই এই ঘটনা সামনে আসার পরেই শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। বচ্চরগাঁও গ্রামের সরপাঞ্চ মেদানি মারাওয়ি জানিয়েছেন, এর আগে কখনও এমন কোনও পরীক্ষা করা হয়নি। "এটা মেয়েদের জন্য অপমানজনক, পরিবারের কাছেও ছোট করে দেওয়া হল তাঁদের," দাবি তাঁর।

দিন্দোরির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রমেশ মারাওয়ি জানিয়েছেন, সাধারণত বয়স বোঝা, সিকল সেল অ্যানিমিয়া এবং শারীরিক সক্ষমতা বোঝার জন্য কিছু মেডিকেল টেস্ট করা হয়। "ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে 'সন্দেহজনক' কয়েকজন মেয়ের ক্ষেত্রে প্রেগনেন্সি টেস্ট করানো হয়েছিল। আমরা শুধু পরীক্ষা করিয়ে তার রিপোর্ট জমা দিয়ে দিই। অন্তঃসত্ত্বা মেয়েদের গণবিবাহ থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত সোশ্যাল জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের," জানিয়েছেন তিনি।

এই ঘটনায় কংগ্রেসের অভিযোগ, স্থানীয় প্রশাসন এবং রাজ্য সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে প্রেগনেন্সি টেস্ট করানোর মাধ্যমে মেয়েদের অপমান করতে চেয়েছে। এই বিষয়ে টুইট করে মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ লিখেছেন, ‘"আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জানতে চাই এই ঘটনাটা কি সত্যি? যদি সত্যিই এমনটা হয়ে থাকে তাহলে কার নির্দেশে মধ্যপ্রদেশের মেয়েদের এমন জঘন্য অপমান করা হল? মুখ্যমন্ত্রীর চোখে কি গরিব এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের মেয়েদের কোন সম্ভ্রম নেই? এমনিতেই মহিলাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের ঘটনায় দেশের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে মধ্যপ্রদেশের শিবরাজ সরকার।" ঘটনার উচ্চপর্যায়ের তদন্ত করে দোষীদের যথোপযুক্ত শাস্তি দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানিয়েছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালের এপ্রিল মাসে শুরু হয়েছিল 'মুখ্যমন্ত্রী কন্যা বিবাহ/নিকা যোজনা'। এই যোজনার অধীনে আর্থিকভাবে বিছিয়ে পড়া পরিবারের মেয়েদের বিয়ের জন্য ৫৬ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করে সরকার।

XS
SM
MD
LG