বুধবার ১৯ এপ্রিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য প্রশাসনিক সদর দপ্ত্র নবান্ন-তে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালকে দিয়ে বিভিন্ন জরুরি ফাইল আটকে রাখছে কেন্দ্রীয় সরকার। এটা দেশের সমস্ত অবিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে হচ্ছে বলে দাবি করেছিলেন তিনি। তারপর সেদিনই সন্ধ্যায় এই নিয়েই তামিলনাড়ু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা ডিএমকে নেতা এমকে স্ট্যালিন-এর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন তিনি।
স্ট্যালিন তাঁর টুইটে জানিয়েছেন, রাজ্যপালরা যেভাবে অগণতান্ত্রিক কাজ কর্ম করছেন তা নিয়ে ডিএমকে তথা তামিলনাড়ু সরকার যে সংঘাতের অভিমুখে হাঁটছে তাতে সংহতি জানিয়েছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। সেইসঙ্গে তাঁর এও দাবি, মমতা তাঁকে প্রস্তাব দিয়েছেন যাতে দেশের সমস্ত অবিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের এক জায়গায় এনে একটা সম্মেলন করা যায়।
পশ্চিমবঙ্গের নতুন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস রাজভবনের দায়িত্ব নিয়ে আসার পর নবান্ন তথা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক থাকলেও ইদানিং তা কিছুটা ক্ষুন্ন হচ্ছে। বিশেষত শিক্ষাক্ষেত্র নিয়ে আচার্য হিসাবে রাজ্যপাল যা করছেন তার বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণার কথা জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
অন্যদিকে তামিলনাড়ুতেও রাজ্যপাল আরএন রবিকে নিয়ে অতিষ্ঠ স্ট্যালিনরা। কেরলেও পিনারাই বিজয়নের নেতৃত্বাধীন বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের সরকার সেখানকার রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানকে নিয়ে বিরক্ত। উচ্চ শিক্ষায় রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়েই তিন রাজ্যে মূল সংঘাত হচ্ছে সরকারের সঙ্গে। অন্য বিষয় থাকলেও মুখ্য হয়ে উঠছে উচ্চশিক্ষা।
এক-দেড় মাস ধরেই বিজেপি বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে নতুন করে সমন্বয় করা শুরু করেছে তৃণমূল। ইতিমধ্যেই মমতার কালীঘাটের বাড়িতে এসে দেখা করে গিয়েছেন সপা প্রধান তথা উত্তরপ্রদেশের বিরোধী দলনেতা অখিলেশ যাদব ও কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী। তাছাড়া ওড়িশা গিয়ে নবীন পট্টনায়েকের সঙ্গেও দেখা করে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর স্ট্যালিনকে মমতার এই ফোন জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।