অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতে জাতীয় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলায় সাজার উপর স্থগিতাদেশ খারিজ


ভারতে জাতীয় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলায় তাঁর দু’ বছর কারাবাসের সাজা হলেও তাঁকে এখনই জেলে যেতে হবে না। জামিনের আবেদনের চূড়ান্ত আইনি লড়াই শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি মুক্ত থাকবেন।

ভারতের গুজরাত রাজ্যের সুরাতের সেশন আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায় তুলে ধরে বৃহস্পতিবার এই খবর জানিয়েছে কংগ্রেস। দলের নির্দেশে রাহুলের আইনজীবীরা বৃহস্পতিবার আরও জানিয়েছেন, সুরাতের আদালতেই রাহুল গান্ধীর আইনি লড়াই এখনও শেষ হয়নি। আর দুটি মামলা সেশন আদালতের বিচারাধীন রয়েছে। তার একটির শুনানি শুরু হবে আগামী ২০ মে।

এদিকে, রাহুল গান্ধীর আর্জি খারিজ হতেই নতুন করে আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি। বিজেপি শিবিরের মুখপাত্ররা দফায় দফায় সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছেন। বিজেপির অভিযোগ, রাহুল ওবিসি-দের অসম্মান করেছেন। আদালতের রায়ে স্পষ্ট, তিনি কত বড় অন্যায় করেছেন। দুটি আদালত তাঁর সাজা বহাল রেখেছে। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি রাহুলের ক্ষমা চাওয়ার উপরই বেশি জোর দিচ্ছে। বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র সম্বিত পাত্র, সোশ্যাল মিডিয়া সেলের ইনচার্জ অমিত মালব্য বৃহস্পতিবার ২০ এপ্রিল সকালেই দাবি করেন, দেশবাসী এবং ওবিসি সমাজের কাছে ক্ষমা চান রাহুল। কারণ, প্রধানমন্ত্রী মোদী ওবিসি সম্প্রদায়ের মানুষ। মোদী পদবিধারীদের চোর বলে রাহুল ওবিসি সম্প্রদায়ের মানুষকে অসম্মান করেছেন।

বিকালে সাংবাদিক বৈঠক করে কেন্দ্রের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর পরামর্শের সুরে রাহুলের উদ্দেশে বলেন, দীর্ঘ আইনি লড়াই ছেড়ে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়ে বিষয়টি মিটিয়ে নিন কংগ্রেস নেতা। রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, রাহুল ক্ষমা চাইবেন না জানিয়ে দেওয়ার পরও বিজেপির এই দাবি তুলে যাওয়ার কারণ, তারা দেখাতে চায় কংগ্রেস নেতা দাম্ভিক, তাঁর অভিধানে ‘ক্ষমা’ শব্দটি নেই।

গত ২৩ মার্চ সুরাতের নিম্ন আদালত মোদী পদবিধারীদের মানহানির অভিযোগে রাহুলকে দু’ বছর কারাবাসের সাজা দিয়েছিল। সেই রায়ের জেরে পরদিনই রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ হয়ে যায়। তবে কংগ্রেস নেতাকে উচ্চ আদালতে আবেদন করার সুযোগ দিতে সাজার উপর ৩০ দিনের জন্য স্থগিতাদেশ জারি করেন নিম্ন আদালতের বিচারক।

রাহুলের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংঘভি, আর এস চিমা এবং কিরিট পানওয়ালারা বৃহস্পতিবার বিকালে জানিয়েছেন, কংগ্রেস নেতার তরফে সুরাতের সেশন আদালতে গত ৩ এপ্রিল তাঁরা তিনটি মামলা রুজু করেছিলেন। তার একটি ছিল সাজার উপর স্থগিতাদেশ। যা বৃহস্পতিবার সেশন আদালতের বিচারক আরপি মোগেরা খারিজ করে দিয়েছেন। ফলে তিনি এখনই সাংসদ পদ ফিরে পাচ্ছেন না।

সেশন আদালতে বাকি দুটি মামলা কী? কংগ্রেস জানিয়েছে, একটি হল, নিম্ন আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায় খারিজের আবেদন। আর একটি জামিনের আর্জি। দলের হয়ে তাঁর আইনজীবীরা বৃহস্পতিবার জানান, ৩ এপ্রিল সেশন আদালতের বিচারক রাহুলের দ্বিতীয় আবেদনটি মঞ্জুর করে নির্দেশ দেন, জামিনের জন্য চূড়ান্ত আইনি লড়াই শেষ না হওয়া পর্যন্ত কংগ্রেস নেতা জামিনে থাকবেন। আর প্রথম মামলাটির শুনানি শুরু হবে ২০ মে।

সেশন আদালতের বৃহস্পতিবারের নির্দেশ অর্থাৎ সাজা খারিজের আবেদন বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে শুক্রবারই রাহুলের তরফে গুজরাত হাইকোর্টে মামলা করা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তাঁর আইনজীবী পানওয়ালা। হাইকোর্ট রাহুলের আর্জি মঞ্জুর করলে সংসদে ফেরার সুযোগ পাবেন কংগ্রেস নেতা।

XS
SM
MD
LG