২০১৩ সালে আফগানিস্তানের যুদ্ধ থেকে ফেরার পর ডিওন উইলিয়ামসন মানসিকভাবে অসাড় হয়ে পড়েছিলেন।পরবর্তী কয়েক বছরে বিদেশে কাজ করার সময় তার মধ্যে মানসিক বিপর্যয়ের আরও লক্ষণ দেখা দেয়।
নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কমান্ডার উইলিয়ামসন বলেন, “মনে হতো আমি নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি।” তিনি বিভ্রান্তি, বিষণ্ণতা, স্মৃতিশক্তি হ্রাস এবং দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি অনুভব করতেন।“আমি আমার ক্যাপ্টেনের কাছে গিয়ে বললাম, ‘স্যার, আমার সাহায্য দরকার। কিছু একটা ঠিক নেই।’”
পেন্টাগন যেহেতু সামরিক পদে ক্রমবর্ধমান আত্মহত্যার হারের মোকাবিলা করতে চায়, সেক্ষেত্রে উইলিয়ামসনের অভিজ্ঞতা মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা চাওয়া সেনাসদস্যদের বাস্তবতার ওপর আলোকপাত করে।
উইলিয়ামসন (৪৬) অবশেষে মাসব্যাপী হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নেন এবং একটি থেরাপিউটিক প্রোগ্রামের মাধ্যমে স্থিতিশীলতা খুঁজে পান। কিন্তু প্রয়োজনীয় সহায়তা পাওয়ার জন্য তাঁকে বছরের পর বছর লড়াই করতে হয়েছিল।
মার্চ মাসে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লয়েড অস্টিন সামরিক বাহিনীর মানসিক স্বাস্থ্য এবং আত্মহত্যা প্রতিরোধ কর্মসূচি পর্যালোচনা করার জন্য একটি স্বাধীন কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন।
প্রতিরক্ষা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে দায়িত্বে সক্রিয় থাকা সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে আত্মহত্যার ঘটনা ৪০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধুমাত্র ২০২০ সালে এই সংখ্যা ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
মন্তব্যের জন্য বারবার অনুরোধ করা হলেও পেন্টাগন কোনো জবাব দেয়নি। কিন্তু অস্টিন প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন যে, ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত আত্মহত্যা প্রতিরোধ কার্যক্রমসহ পেন্টাগনের মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বর্তমান কার্যক্রমগুলো অপর্যাপ্ত প্রমাণিত হয়েছে।
গত বছর সেনাবাহিনী তার কমান্ডারদের জন্য ব্রিফিং স্লাইড ও একটি স্ক্রিপ্টসহ নতুন নির্দেশিকা জারি করেছিল যে, কীভাবে পদে পদে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাগুলো পরিচালনা করা যায়। কিন্তু ভয়ঙ্কর দীর্ঘমেয়াদী চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। আত্মনির্ভরতার অভ্যন্তরীন সামরিক সংস্কৃতির প্রেক্ষিতে অনেক সৈন্য মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা স্বীকার করার কলঙ্ককে ভয় পায়।